সিঁড়ির নিচে দাঁড়িয়ে দোতলার সেই উত্তরের জানলা বরাবর তাকে আজও দেখা যাচ্ছে।
বরাবর দাঁড়িয়ে তাকে প্রাণভরে দেখার সাধ্য নেই, তাই এই চুপি চুপি দর্শন।
একটু আধটু করে এই জানলার ফাঁকে বা দরজার আড়াল হতে কিংবা অনেকটা দূরত্ব রেখে তাকে দেখে প্রাণের পিপাসা মেটানো।
চুপ করে শিক্ষকদের কক্ষের পিছনের জানলার কাছে দাঁড়িয়ে তার শুদ্ধ বচন শোনা।
দুর থেকে তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা বিনা দ্বিধায়।
টাঙ্গাইল এর সুতি শাড়ি পরে খুব পরিপাটি হয়ে একটু একটু করে তার হেঁটে আসা দেখা।
খুব কাছে দাঁড়িয়ে বুকের ভেতর হওয়া ডামাডোল কে চুপ করানো।
চুপি চুপি তাকে হৃদয়ে বেড়ে উঠা ভালোবাসার কথা চিৎকার করে বলা।
শ্রেণী কক্ষের এক কোণ হতে আরেক কোণে তার উচ্চারিত শব্দের অনুরণন।
একঘোরে তার দিকে তাকিয়ে থাকার শাস্তিস্বরূপ কক্ষের বাইরে তারি নজরে রাখা।
হঠাৎ চোখে চোখ পড়ায় চুপ হয়ে জমে যাওয়া প্রেমের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা, আর তার ইতস্তত দৃষ্টি সড়ানো।
চুপি চুপি বেড়ে উঠা ভালোবাসা বুঝতে পারার পর কিছু না করতে পারায় তার ব্যথিত সেই দৃষ্টি।
মহাবিদ্যালয়ের শেষ দিনে এসে হাত ধরে আমায় এক কাপ চায়ের প্রস্তাব।
চায়ের প্রতিটি চুমুকে মনের ভালোবাসাকে চুপিসারে মনেই লালন করার নিবেদন।
বিদায় নেবার বেলায় হাতের স্পর্শ জানিয়ে দিল এতো দিনের চুপি চুপি ভালোবাসা এক দিকের নয়।
চুপ করে থাকা প্রেমের শিখা জ্বলছিল সমানতালে সমান ধারায়, শুধু অসমান ছিল শরীর।
চুপি চুপি আজও এই দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেই উত্তরের জানলাতে তার দাঁড়িয়ে থাকাকেই।